রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় যে ছেলেটি কিছু আই টি বিষয়ক কিংবা টেকনিক্যাল বিষয়ক কথা বলেছেন সেই ব্যাক্তি, মানে তানভীর হাসান জোহাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা গতকাল রাত থেকে।
জোহার সাথে থাকা এক বন্ধুর বরাত দিয়ে জানা যায় যে জোহাকে দুটো মাইক্রোবাস দু দিক থেকে ঘিরে ফেলে উঠিয়ে নিয়ে চলে যায় এবং সেই বন্ধুকেও প্রথমে উঠিয়ে নিয়ে গেলেও পরে রাস্তার এক যায়গায় তাকে ফেলে রেখে যায়। একই সাথে বিদ্যুৎ বেগে জোহা, আই সি টি বিভাগের কেউ নন বলে রাষ্ট্র থেকে বয়ানও দেয়া হোলো। এই লক্ষ কোটি জনতার শহরে হয়ত জোহাকে ভুলে যাব আজ শেষ রাতের দিকেই কিংবা অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সৌম্য বা তামিমের দুটো ছক্কার বদৌলতে সামনের সোমবার দুপুরে।
রিজার্ভের অর্থ চুরির ঠিক একই সময়ে আমরা জানতে পারলাম তিতাস গ্যাসের ৩০০০ কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা। যদিও রিজার্ভের চুরির ঘটনার বেগের কাছে এই খবরটি খুব বেশী সামনে আসেনি। তিতাস এইভাবে বেঁচে গেলো।
হাওয়া ভবন নিয়ে আমরা কত আতংকিত ছিলাম সেটি ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে বেঁচে থাকা মানুষেরা স্মৃতি চারন করলেই হয়ত বলতে পারবেন। পত্র-পত্রিকাতে সেখানে দেখেছি হাওয়া ভবন, তারেক রহমানের হাজার কোটি লুটের গল্প।
আজ এই সময়ে এসে আর হাওয়া ভবনের কথা মনে পড়ে না। আজকের লুটপাটের কাছে তারেক একটা নবজাতক শিশু আর হাওয়া ভবন নস্যি হয়ে গেছে। যে লুটপাট হয়েছে বা হচ্ছে বাংলাদেশে সেখানে হাজার কোটি টাকার নীচে লুটপাটের কথাই নেই। বিসমিল্লাহ গ্রুপ, ডেস্টিনি, হলমার্কস আরো কত…লিস্ট শেষ হবেনা।
মাঝখান দিয়ে নিজামীর রায়টা দেয়া হোলো। এই রায়টা এসেছে খুব হঠাৎ করে। সাধারণত আপীলেট ডিভিশান সংক্ষিপ্ত রায় দেবার পর এই পর্যন্ত সব মামলাগুলোতে ৩ মাস বা তারও বেশী সময় নিয়েছে। শুধু এই মামলার ক্ষেত্রে ২ মাস থেকে কিছুদিন বেশী। রায়টা মাত্র ১৫৩ পৃষ্ঠার। বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার লিখিত রায়। বাকীরা সবই এগ্রি করেছেন। অথচ অন্য সব মামলাগুলোতে কমের পক্ষে দু’ জন বিচারপতি তাঁদের পর্যবেক্ষন দিয়েছিলেন। আমি ভুল হতে পারি, কিন্তু তারপরেও বলি- খুব তাড়াহুড়োর একটা রায় মনে হোলো। হয়ত সময়টা বড় গোলমেলে বলেই…
রাষ্ট্র শুধু তার হাতের অস্ত্রগুলো দিয়ে আমাদের ভুলোতে চায়। রাষ্ট্র চায়, সরকার চায় আমরা ভুলে থাকি। মাদকের সম্রাটেরা যেমন চায় আমরা ডুবে থাকি আফিমে, গাঁজায়, চরসে, ঠিক তেমন।
আমাদের একটা নীল ঘুম পাড়িয়ে রাখলে আমরা সেই ঘুমে দেখব রূপকথার রাজা রানী, ফ্লাইওভার, ফ্লাইওভারে আবার এস্কিলেটর, মেট্রোরেল, পদ্মা ব্রীজ, ফাটা কেষ্ট’র দৌড় ঝাঁপ…
যা কিছু হারাই, যারা হারায়, যাদের সব লুটপাট হয়। তারা হচ্ছি আমরা। আমরা জনগণ। রাষ্ট্রের নানাবিধ মায়াবী ঘুমের ঔষধে ঘুমগ্রস্থ পাবলিক